Skip to main content

"পাহাড়ি জাতীয়তাবাদ ও নারী প্রশ্ন" প্রসঙ্গেঃ

 উইমেন চ্যাপ্টারে প্রকাশিত ডালিয়া চাকমার লেখা 

মুল লেখার লিংক ,👉 এখানে

ঢাকা থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম অনেক দূরে! এই দূরত্ব-টা বুজতে মগজ লাগে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যা হচ্ছে কিংবা আপনাকে গালি দেওয়া, হ্যারাসমেন্ট করা! এইসব কিন্তু পাহাড় পর্যন্ত পৌছায় না। পৌঁছালেও আপনি কিংবা আমি পাহাড়ের মানুষের কাছে মূল্যহীন। তাঁদের কাছে জীবন সংগ্রাম ই মুখ্য! আমি আপনি তুচ্ছ। আপনাকে যারা গালি দিচ্ছে আর আপনারা যারা  ভিতর থেকে না দেখে সবকিছুই এক-কেন্দ্রিক ভাবেন! আমি মনে করি আপনারা সবাই এক গোত্রের প্রানী।  আপনাকে যারা গালি দিচ্ছে কিংবা হ্যারাসমেন্ট করছে এক সময় এই বর্বর প্রাণীদের সমাজিকভাবেই শাস্তি দেওয়া হত। যখন বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র শাসন শুরু করল তখন থেকেই এরাও শক্তিশালী হয়ে উঠে। পাহাড়ের সামাজিক বা রাজনৈতিক ক্ষমতা হাড়িয়ে যেতে থাকে। অনুরোধ থাকল, যদি সময় হয় জুম ঘরে কিংবা যারা জুম চাষ করে তাঁদের সাথে কয়েক দিন থেকে আছেন। যান্ত্রিক সভ্যতা আর পাহাড়ের সংস্কৃতি আকাশ-পাতাল তফাৎ। এইটা বুজে নেওয়ার দায়িত্ব নিজের আর কারোর নয়। আগে নিজেকে জানুন, আপনি কোথায় থেকে এসেছেন, আপনার আইডেন্টিটি কি? আপনার সংস্কৃতি কি? যেখানে অস্তিত্ব লড়াইয়ের সংগ্রাম চলে! এখানে আপনার-আমার কি অবদান কি? বাঙালি বিয়ে করলে সমাজ মেনে নেয় না! এই ইতিহাস কিন্তু এক দিনে তৈরি হয়নি। একটা ট্র্যাজেডির  মধ্যে দিয়ে সমাজ এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। 

কেইস ১ঃ লেখিকা বলেছেন যে, এক চাকমা নারী স্বেচ্ছায় এক বাঙালী পুরুষ বিয়ে করার পর ত্যাজ্য হন (ভুড়ি ভুরি এহেন উদাহরণ)।" কিন্তু লেখিকা জানেন না পাহাড়ি আদিবাসী নারী বাঙালি পুরুষ বিয়ে করার পরে   আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে কিংবা অত্যাচার করে আদিবাসী নারীদের মেরে ফেলা হয়। এই পর্যন্ত কতজন আদিবাসী নারীকে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে খুন করা হয়েছে! হিসাব-টা একটু দেখে নিবেন। একটা উদাহারণ দিচ্ছি কয়েক মাস আগে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের নিবেদিতা রোয়াজাকে (নুসরাত জাহান, বিয়ের পরের নাম) আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে হত্যা করা হয়। তিনি ছিলেন ছাত্রলীগের নেত্রী। 

কোন বাঙালি পুরুষ উদারভাবে পাহাড়ের সংস্কৃতিকে সম্মান জানিয়েছে সেই রেফারেন্স দেওয়ার অনুরোধ থাকল। পাহাড়ে অনেক বাঙালি গ্রাম আছে, যে পাহাড়িদের সাথে পাশাপাশি বসবাস করেন। যাদের ব্রিটিশ শাসনামলে সেটেলমেন্ট করা হয়েছিল। তাদের সাথে তো কোন সংঘাত হয় না। ব্রিটিশ আমলে সেটেলমেন্ট হওয়া অনেক বাঙালিকে জীবন দিতে হয়েছে আঞ্চলিক রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার কারণে। তাদের সাথে প্রেম-কিংবা বিবাহ তো হয় না! দীর্ঘ সময় এক সাথে বসবাসের কারণে তারা জানেন যে, বাঙালির সংস্কৃতি এখনো সেই পর্যায়ে যায় নি কিংবা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপথ এখনো সেই অবস্থান নির্মাণ হয়নি, যে যেখানে জাতিগত নিপীড়ন কিংবা সংস্কৃতি গত আগ্রাসন সেখানে পা দেওয়া মানেই আগুনে ঘি ঢালার মতন। সরাসরি ভিন্ন জাতি বিয়ে করা সাফাই গাওয়া তো ভূল। কারণ আমাদের এখনো অনেক পথ হাঁটা বাকি। 

কেইস ২ঃ লেখিকা এখানে  ব্লাড পিউরিফিকেশন কথা বলেছেন। এখানে  ব্লাড বলতে কিছু নেই।  মুলত সংস্কৃতিক সংঘর্ষ। দেশবিভাগের পর থেকে পাহাড়ি মানুষ জাতিগত-সংস্কৃতিগত নিপীড়ন দেখে এসেছে। নিজেদের সংস্কৃতিকে যেভাবে তুচ্ছভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে কিংবা হচ্ছে। যেমন চাকমারা সাপ-ব্যাঙ খায়! বছর দুই-তিন আগে  চিটাগাং-এ  এক বাঙালি ডাক্তার বাংলা ভাষা বলতে না পারার কারণে এক চাকমা রোগীকে চিকিৎসা পর্যন্ত করেন নি! চাকমাদের প্রধান খাদ্য মদ আর ভাত! যারা যারা জন্ম থেকেই সংস্কৃতিকভাবেই অবহেলিত হয়েছে। কেউ এসে যদি নিজেদের সংস্কৃতিকে মন-প্রান থেকে গ্রহন করেন তারা একটু বেশীই খুশি হবেন। এইখান থেকেই বুজা যায় পাহাড়ের মানুষ অপমানের বোঝা এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে। 

কেইস ৩ঃ নর্থ ইস্ট বাদে ভারত উপমহাদেশের সমাজ তাই রক্ষণশীল সমাজ। নর্থ ইস্ট সমাজে (পার্বত্য চট্টগ্রামসহ) নারী-পুরুষ যে স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠে সেইটা সমতলের ভারতবর্ষে খুঁজে পাবেন না। কেউ যদি আবেগের জন্য স্বাধীন জীবন ছেড়ে রক্ষণশীল জীবনে প্রবেশ করে  একজন মানুষ হিসেবে কেউই মানতে পারবে না। ২০১৩ এক বাঙালি পুরুষ দুইজন পাহাড়ি আদিবাসী নারী বিয়ে করেই রুমা থাকত। যেই-টা আমাদের সমাজে কঠিন অপরাধ। অথচ রুমা পাহাড়ি আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল! এই সাহস তারা কোথায় থেকে পায়! কারা দেয়? এর বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই কিন্তু সাম্প্রদায়িক সংঘাতে রুপ নেয়। এভাবেই প্রতিনিয়ত সংস্কৃতিক আগ্রাসন তো চলছেই। কোন পাহাড়ি পুরুষ যদি বাঙালি নারী বিয়ে করে বাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চলে থাকে তাহলে খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ থাকল। 

কেইস ৪ঃ কোন পাহাড়ি আদিবাসী নারী সাদা চামড়ার পুরুষকে বিয়ে করলে সমাজ গ্রহন করার মূল কারণ হচ্ছে সংস্কৃতি কারণে। একজন সাদা চামড়ার পুরুষ পাহাড়ের সংস্কৃতি যতোটা আপন করে নেয় একজন বাঙালি কিন্তু তা পারে না। কারণ বাঙালির রক্ষণশীলতা। একজন চাদা চামড়ার পুরুষের সাপ-ব্যাঙ খাওয়া স্বাভাবিক কিন্তু বাঙালির কাছে অস্বাভাবিক। আপনি বলেছেন "আমি শুনেছি আদিবাসী সমাজে নাকি বর্ণ বৈষম্য নাই।" আপনি একজন পাহাড়ি আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধি হয়ে শুনেছেন বলেছেন! আপনি নিজে প্রতিনিধি হয়ে এই শুনেছেন শব্দটা কতটুকু মানায়?

কেইস ৫ঃ কয়েক মাস আগে আমার এক কাছের বন্ধু মারমা নারী বিয়ে করেছে। আমার দুই মামা লাগে তারা একজন ত্রিপুরা আর একজন মারমা নারী প্রেম করে বিয়ে করেছেন। অনেক চাকমা নারী মারমা পুরুষ বিয়ে করেছেন। কই আমি তো কোন সমস্যা দেখলাম না। মুলত সংস্কৃতিগত মিল থাকায় সংঘাতে পরিণত হয় না। পাহাড়ে আদিবাসীদের মধ্যে জাতিগত  সংঘাত সৃষ্টি করে দেওয়া সেই স্বাধীনতার পর থেকেই রাষ্ট্রীয় পলিসি। চাকমা-ত্রিপুরা-তঞ্চঙ্গ্যা জাতীয়তাবাদ উস্কে দেওয়া এথনিক ক্লিনজিং এর একটা অংশ মাত্র। এই জাতীয়তাবাদের সংঘাত উস্কে দেওয়া থেকে মুক্তির জন্য আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রয়াত এম এন লারমা। 

লেখিকা যে পাঁচটা কেইস থেকে সিদ্ধান্তে উন্নীত হয়েছেঃ 

ডালিয়া বলেছেন "নারী সন্তান উৎপাদক ছাড়া কিছু নয়।" পাহাড়ে যারা একাডেমিক পড়াশুনা করে শিক্ষিত হয়েছেন তারা দুই সন্তানের বেশী নেয়। বেশীরভাগ ই এক সন্তান নিয়ে থাকেন। 

বাঙালি পুরুষদের আদিবাসী নারীদের প্রতি যে যৌনতা কেন্দ্রিক লোভ-লালসা! তা কিন্তু ভয়াবহ। আদিবাসী নারী-টি কি খায় কি পরে কিংবা কিভাবে জীবন-যাপন করে সেইগুলো একজন বাঙালি পুরুষের কাছে যৌনতার চাইতে তুচ্ছ।       

সন্তান পালনের দায়ভার পাহাড়ের সমাজে কিন্তু শুধু নারীদের উপর কোনদিন ছিল না। আমার জন্ম দুর্গম এলাকায়। চুক্তির পরেই বাবা-মা এক সাথে কাজে যেত আমি গ্রামেই থাকতাম। সবার সাথে খেলাধুলা করতাম। দেখাশুনার দায়িত্ব ছিল বয়স্ক কিংবা যারা কাজে যান বি তাদের। একজন পরিবারিক সন্তান নয় বরং সামাজিক সন্তান হিসেবেই গড়ে উঠেছি। আপনি দুর্গম এলাকায় যান দেখবেন গ্রামের শিশুরা একসাথেই খেলাধুলা করেই বড় হয়ে উঠে। পাহাড়ের গ্রামের সমাজে বেশীরভাগ সংসারে এখনো নারী প্রধান।  

এই সামাজিক প্রথা ভেঙ্গে কেন পরিবারতান্ত্রিক সমাজে পরিণত হচ্ছে সেইটা রাষ্ট্র কি পলিসি জারি রেখেছে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপথে আলোচনার বিষয়। আঞ্চলিক রাজনৈতিক কর্মীকে যদি রাষ্ট্রীয় বাহিনী সন্ত্রাসী চিহ্নিত গুলি করে হত্যা করে তাকে তো আমি সন্ত্রাসী বলতে পারব না। সে কেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজনীতিতে পা দিল সেই জায়গাতেই আলোচনার বিষয়। আশির দশকে এরশাদ সরকার দেখে দেখে পাহাড়িদের সরকারী চাকরী দিয়েছিল! তার মূলে ছিল  আদিবাসী আন্দোলন দমিয়ে রাখা, আদিবাসীদের রাজনৈতিক বিমূখ করা। যারফলে, সরকারী চাকরীজীবীদের মধ্যে একটা মধ্যেবিত্ত শ্রেণীতে পরিণত হয়। সামাজিক অবস্থা ভেঙ্গে পরিবারতান্ত্রিকে পরিণত হয়। চাকরীর কারণে বহু পাহাড়ি পাহাড় ছাড়ে। সংস্কৃতিগতভাবে অনেক পাহাড়ি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। 

লেখিকা আদিবাসী সমাজে চলমান প্রবাদ বলেছেন যে, "আদিবাসী নারীরা বেশি শিক্ষিত হলে যোগ্য পুরুষ পায় না।"  এই কথা বলার মূল কারণ হচ্ছে ঐ এরশাদ সরকারের পলিসি দিয়ে যারা নিজের সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হয়েছে তাদের নিয়ে। যাকে বলে আইডেন্টিটি ক্রাইসিস। এই আইডেন্টিটি ক্রাইসিস রাষ্ট্র কিভাবে ক্রিয়েট করল! নিজেদের সংস্কৃতি থেকে পাহাড়িদের রাষ্ট্র কীভাবে বিচ্ছিন্ন করে দিল। পাহাড়ের সংস্কৃতিকে রাস্ত্রীয়ভাবে যেভাবে উপস্থান করা যা সবার কাছে ঘৃণ্যভাবেই পৌছায়। রাষ্ট্রীয় পলিসির কারণেই অনেকেই আইডেন্টিটি ক্রাইসিস ভুগতে বাধ্য। 

থানচি-আলীকদম রোডে যান গেলেই দেখবেন পাহাড়ি আদিবাসীদের ধর্মান্তরিত করা জন্য মাদ্রাসা আর মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। আর্থিক লোভ দেখিয়ে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে। ধর্মান্তরিত করার মূল কারণ হচ্ছে পাহাড়ি আদিবাসীদের বাঙালিতে রুপান্তর করা।  সবচেয়ে পাহাড়ি আদিবাসী নারী বাঙালি পুরুষ বিয়ে করেছেন বান্দরবানে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর এইটা ছিল টপ সিক্রেট পলিসি। কারণ হল আদিবাসী নারী পারিবারিকভাবেই সম্পত্তি ভাগ পায়। পলিসি ছিল আদিবাসী নারী বিয়ে যাতে জায়গা দখল করতে পারে। আদিবাসী পুরুষদের আচরণ বাঙালি পুরুষদের মতোই হচ্ছে অস্বীকার করার কিছু নেই। আর আপনারা নিজের সংস্কৃতি জানা-বুজার আগে কেন বাঙালি সংস্কৃতিতে পা রাখেন কিংবা বাঙালি বিয়ে করেন সেইটাও খণ্ডন করা জরুরী। কিন্তু কেন হচ্ছে, কারা এই সিস্টেম জারি রেখেছে, কিভাবে হচ্ছে। এইগুলো আগে খণ্ডন করা জরুরী। এই দায়ভার আমার? আপনার? রাজনীতির? সমাজের? না রাষ্ট্রের?

ভাবতে হবে মগজ দিয়ে! সময়ের বিপরীতে হলেও ভাবতে হবে।

Comments

Popular posts from this blog

শীল সম্পর্কে বিস্তারিত

          *** প্রাণী হত্যা মহা পাপ,                   প্রাণী হত্যা হতে বিরত থাকুন।                    উ গুণবদ্ধন পঞ্ঞা মহাথের। ( রাম জাদী)  শীল হচ্ছে আদি কল্যাণ, "সব্ব পাপস্স অকরণং" অর্থাৎ সর্ব প্রকার পাপক্রিয়া বর্জন। পাপক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয় কায়ে, বাক্যে ও মনে। যা দ্বারা মন কলুষিত হয়। কিন্তু শীলের লক্ষ্য হচ্ছে পাপের পঙ্কিল পথ পরিহার করে চরিত্রকে শুদ্ধ ও সুন্দর করা। ধর্ম জীবনের বিকাশে, জীবনের পরম কল্যাণ লাভের পথে শীল বা চারিত্রিক শুদ্ধতা প্রথম প্রদক্ষেপ। পঞ্চশীলকে সবসময় সকল মানুষের পরিধানকৃত বস্ত্রের মত নিত্য পালনীয় বলে নিত্যশীল বলা হয়। কিকীব অন্ডং চমরীব বালধিং, পিয়ং বা পুত্তং নয়নং ব এককং, তথেব সীলং অনুরক্খমানকা, সুপেসলা হোথ সদা সগারবতি। কিকী পক্ষী যেমন অন্ড রক্ষা করে, চমরীগাই যেমন স্বীয় লেজ রক্ষা করে, মাতা যেমন এক মাত্র প্রিয় পুত্র এবং কানা যেমন এক চক্ষু সযত্নে রক্ষা করে তেমন শীল অনুক্ষণ রক্ষা উচিত। আজ অষ্ট শীলের প্রথম শীল সম্পর্কে আলোকপাত করব। *...

কাল পুরুষ

  এটি উত্তরাধিকার ও কালবেলা উপন্যাসের ঘটনা প্রবাহ ধরে লেখা আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। কালবেলা উপন্যাসে অনিমেষ যে ফসল বুনেছিল এই উপন্যাসে তা চারা গাছ হয়ে একটু একটু করে বড় হতে থাকে! অনিমেষ আর মাধবীলতার ভালোবাসার ফসল অর্ক। নামটা মাধবীলতার দেয়া। তাদের নিস্তব্ধ জীবনের সূর্য যেন অর্ক। পঙ্গু স্বামী ও ছেলেকে নিয়ে বস্তির এক বাড়িতে মাধবীলতার বাস! পরিবেশ পরিস্থিতির কারনে সব সময় কি একটা ভয়ে থাকে মাধবীলতা! বস্তিতে থাকার মাশুল অবশ্য দিতে হয় তাদের। স্কুল আর ঋণের চাপে জর্জরিত মাধবীলতা আর পুলিশের অত্যাচারে পঙ্গু অসহায় অনিমেষের শত সতর্কতার পরও অর্ক আস্তে আস্তে বস্তির পরিবেশে আসক্ত হয়ে পরে। কিলা, খুরকি, বিলা এরাই হয়ে ওঠে অর্কর নিত্যদিনের সঙ্গী। তবে অন্য একটা ঘটনায় সমাজের উচু তলার কিছু মানুষগুলোর আসল চেহারাটা সামনে আসে অর্কর। ঘটনার তীব্রতায় জ্বর চলে আসে তার। এতবড় ছেলে মায়ের আচলে মুখ গুজে খালি বলে চলে বমি পাচ্ছে মা। কতটা নোংরা কদর্যতা দেখলে একটা ছেলে এমন কথা বলতে পারে এইসব ভেবে তীব্র প্রতিবাদে মুখরিত হয়ে ওঠে অর্ক। নিজের সাথে নিজেই প্রতিজ্ঞা করে সমাজের এসব অসঙ্গতির সাথে কখনোই তাল মেলাবে না। তারপর তাকে ব...